শিক্ষকদের আমরণ অনশন চলছে, হাতে হাতে স্যালাইন
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
দেশের নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভূক্তির দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের আমরণ অনশনের গতকাল ছিলো পঞ্চম দিন। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে দেখা যায়, অনশনরত অনেক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছে। স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে বেশ কয়েকজন শিক্ষককে। কথা হয়, নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গত ডিসেম্বরে এসেছিলাম, যখন ছিল আমাদের উইন্টার ভ্যাকেশন (শীতের ছুটি)। এইবার এসেছি, আমাদের রোজার যে ছুটি, ঈদের যে ছুটি এর মধ্যে এসেছি। আমরা কিন্তু শিক্ষা কার্যক্রমকে ব্যাহত করার জন্য আসিনি। তারপরে আমরা তো নিরুপায় আসলে এখন। পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে।’
এদিকে, আমরণ অনশন চালিয়ে যাওয়া শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মধ্যে ৯২ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ১১ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পাশাপাশি ৬৯ জনকে দেওয়া হয়েছে স্যালাইন।
গত ৫ই জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী নন-এমপিওভূক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর এমপিওভূক্তির দাবি জানান শিক্ষকনেতারা। তাদের অভিযোগ, বাজেটে এমপিওভূক্তির সুস্পষ্ট কার্যকর পদক্ষেপের কথা বলা হয় নাই। গত ২৫ জুন থেকে তাঁরা আমরণ অনশন শুরু করেন।
সারা দেশে পাঁচ হাজার ২৪২টি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি) কর্মরত প্রায় ৮০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীকে এমপিওভুক্তির দাবিতে গত ৫ জানুয়ারি অনশন চলাকালীন প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে একান্ত সচিব মো. সাজ্জাদুল হাসান, শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইনকে সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত হন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সব নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দেন।
তবে ২০১৮-১৯ প্রস্তাবিত বাজেটে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, এমপিওভুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়নি। খবরটি সারা দেশের নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষকরা আহাজারি-আর্তনাদে ও বিক্ষোভে ফেটে পড়েন, তাই আগের ঘোষণা অনুযায়ী ১০ জুন পবিত্র রমজান মাসে সারা দেশ থেকে আসা শিক্ষকরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান গ্রহণ করেন। শিক্ষকরা পুলিশি বাধা, গ্রেপ্তার, বৃষ্টি-বাদল, রোদ ও ভ্যাপসা গরম, রাতে মশার কামড় খেয়ে রাজপথের ফুটপাতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।